ইঞ্জিন ওভারহিট হওয়ার লক্ষণ, কারণ, করণীয় এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
________________________________________
ইঞ্জিন ওভারহিট (Engine Overheating) কী?
ইঞ্জিন চলার সময় উচ্চমাত্রায় গরম হয়। এ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কুলিং সিস্টেম (radiator, coolant, thermostat ইত্যাদি) কাজ করে। যদি এই সিস্টেম ব্যর্থ হয়, বা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখনই ইঞ্জিন “ওভারহিট” করে। এটি ইঞ্জিনের স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।
________________________________________
ইঞ্জিন ওভারহিট হওয়ার লক্ষণসমূহ (Symptoms)
১. টেম্পারেচার গেজ হাই দেখানো
গাড়ির ড্যাশবোর্ডে থাকা তাপমাত্রা গেজটি যদি মাঝামাঝি থেকে উপরের দিকে (H) চলে যায়, এটি ওভারহিটের সবচেয়ে আগে দেখা যাওয়া সংকেত।
২. ইঞ্জিনের উপরিভাগ থেকে ধোঁয়া উঠা
সাদা বা ধূসর ধোঁয়া হুডের নিচ থেকে উঠতে দেখা গেলে বুঝতে হবে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে গেছে।
৩. ইঞ্জিন পারফরম্যান্স হঠাৎ কমে যাওয়া
ইঞ্জিন গরম হলে গাড়ি “ল্যাগ” করতে শুরু করে বা ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৪. গন্ধ আসা (পোড়া বা ঝাঁজালো গন্ধ)
গরম ইঞ্জিন থেকে পুড়ে যাওয়া কুল্যান্ট বা ইঞ্জিন অয়েলের গন্ধ আসতে পারে।
৫. কুল্যান্ট/অয়েল লিক
ইঞ্জিনের নিচে সবুজ, কমলা, বা গোলাপি রঙের তরল দেখা গেলে সেটা কুল্যান্ট হতে পারে। কুলিং সিস্টেমে সমস্যা থাকলে এটি ঘটে।
________________________________________
ওভারহিট হওয়ার প্রধান কারণসমূহ
কারণ ব্যাখ্যা
কুল্যান্ট লেভেল কম রেডিয়েটরে পানি বা কুল্যান্ট না
থাকলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয় না।
রেডিয়েটরে লিক পানি বের হয়ে যাওয়ার ফলে
তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
থার্মোস্ট্যাট নষ্ট ইঞ্জিনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে
সহায়ক, এটা নষ্ট হলে পানি চলাচল বন্ধ হয়।
রেডিয়েটর ফ্যান কাজ না করা গরম বাতাস বের না হওয়ায় ইঞ্জিন
ওভারহিট করে।
ওয়াটার পাম্পে সমস্যা পানি যথাযথভাবে সঞ্চালন না হলে
ওভারহিট হয়।
কুলিং সিস্টেমে এয়ার লক বায়ু জমে থাকলে কুল্যান্ট
সঠিকভাবে ঘুরতে পারে না।
________________________________________
ইঞ্জিন ওভারহিট হলে আপনি কী করবেন?
গাড়ি চালু অবস্থায়:
1. গাড়ি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিরাপদ জায়গায় থামান।
2. এসি বন্ধ করে দিন, হিটার চালু করতে পারেন (ইঞ্জিন ঠাণ্ডা করতে
সাহায্য করে)।
3. ইঞ্জিন বন্ধ করে দিন।
4. ২০–৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন, যাতে ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হয়।
5. রেডিয়েটর ক্যাপ খুলবেন না যতক্ষণ না ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হয়। এটি
বিপজ্জনক—চাপে গরম কুল্যান্ট ছিটকে আসতে পারে।
6. কুল্যান্ট বা পানি চেক করুন। কম থাকলে যোগ করুন।
7. সমস্যা সমাধান না হলে, গাড়ি মেকানিকের কাছে নিয়ে যান বা টো
ট্রাক ডাকুন।
________________________________________
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা (Prevention)
1. নিয়মিত রেডিয়েটর ও কুল্যান্ট চেক করুন।
2. প্রতি ৩০,০০০ কিঃমিঃ বা বছরে একবার কুল্যান্ট পরিবর্তন
করুন।
3. রেডিয়েটর ফ্যান ও থার্মোস্ট্যাট সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা
চেক করুন।
4. ইঞ্জিন অয়েল চেক ও পরিবর্তন করুন। অয়েল ইঞ্জিন ঠাণ্ডা
রাখতেও সাহায্য করে।
5. গাড়ির সার্ভিস টাইম মিস করবেন না।
________________________________________
যদি সমস্যাটা ঘনঘন হয়:
• সম্ভবত কুলিং সিস্টেমে বড় কোনো সমস্যা রয়েছে।
• সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে রেডিয়েটর ফ্লাশ, ফ্যান টেস্ট, থার্মোস্ট্যাট ও ওয়াটার পাম্প পরীক্ষা করান।
________________________________________
আপনার গাড়ির মডেল কী? । আপনি কি সম্প্রতি এমন কোনো সমস্যায় পড়েছেন? আপনি এই বিষয়ে আরো জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটে ব্লগ পোস্ট গুলো ফলো করতে পারেন।
যে কোন ধরনের প্রয়োজনীয় পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায়…
অথবা সরাসরি কথা বলতে চলে আসুন আমাদের আর এস ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার এর অফিসে…